আসন্ন শারদীয় দুর্গোৎসবকে সামনে রেখে হবিগঞ্জের লাখাই উপজেলায় ব্যস্ত সময় কাটাচ্ছেন প্রতিমাশিল্পীরা। উৎসব যতই ঘনিয়ে আসছে, শিল্পীদের ব্যস্ততাও তত বাড়ছে। কেউ নতুন প্রতিমার কাঠামো তৈরি করছেন, আবার কেউ তুলির আঁচড়ে দিচ্ছেন শেষ রঙের ছোঁয়া।


লাখাই উপজেলার মোড়াকরি ইউনিয়নের মোড়াকরি গ্রাম, পূর্ব বুল্লাসহ বিভিন্ন গ্রামে বর্তমানে অর্ধশতাধিক মৃৎশিল্পী রয়েছেন। এর মধ্যে প্রায় ২০ জন প্রতিমাশিল্পী ও ৩০-৩৫টি মৃৎশিল্পী পরিবার রয়েছে। একসময় লাখাইয়ের প্রতিমাশিল্পীদের সুনাম ছিল দেশজুড়ে। তবে নানা প্রতিকূলতা ও উপকরণের মূল্যবৃদ্ধির কারণে অনেকেই এই পেশা ছেড়ে দিতে বাধ্য হয়েছেন।


শিল্পীরা জানান, মানভেদে প্রতিটি প্রতিমা তৈরি করে ২০-৫০ হাজার টাকা পাওয়া যায়, তবে মুনাফা থাকে মাত্র ৮-১৫ হাজার টাকা। নগদ পুঁজির অভাবে চাহিদা অনুযায়ী কাজ করতে পারেন না তারা। মাটি ও রঙসহ অন্যান্য উপকরণের দাম বাড়ায় কষ্টের কাজ হলেও আশানুরূপ লাভ হচ্ছে না।


শারদীয় দূর্গা পূজা সনাতন ধর্মাবলম্বীদের বড় ধর্মীয় অনুষ্ঠান হওয়ায় এ সময় কাজ করার বড় সুযোগ থাকলে নগদ পুঁজির অভাবে বেশিরভাগ শিল্পীরাই সেই অনুপাতে কাজ করতে পারেননি বলে জানিয়েছেন। তাছাড়া কাজের কষ্ট ও সময়ের অনুপাতে মুনাফা কম হওয়ায় আগ্রহ হারাচ্ছে নতুন প্রজন্ম।


মোড়াকরি গ্রামের অনুকূল পাল, নিত্যানন্দ পাল, জগদীশ পালসহ কয়েকজন প্রতিমাশিল্পী জানান, এক সময় এখান থেকে প্রতিমা কারিগরদের সিলেট, ভৈরব, শায়েস্তাগঞ্জসব বিভিন্ন জায়গায় নিয়ে যাওয়া হতো। কিন্তু এখন আর আগেকার মতো কাজ নেই।


উপজেলা পূজা উদযাপন পরিষদের সভাপতি প্রাণেশ গোস্বামী জানান, এ বছর লাখাই উপজেলায় ৬৬টি মণ্ডপে পূজা অনুষ্ঠিত হবে। প্রস্তুতি সন্তোষজনকভাবে এগিয়ে যাচ্ছে।


উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) অনুপম দাস অনুপ বলেন, “মৃৎশিল্পীদের জীবনমান উন্নয়ন ও আধুনিকায়নে সব ধরনের সহযোগিতা করা হবে। তাদের সঙ্গে কথা বলে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়া হবে।”

Single News Bottom

শেয়ার করুনঃ

ধর্ম থেকে আরো পড়ুন

হবিগঞ্জ, লাখাই, দুর্গোৎসব, প্রতিমা, শিল্পী, প্রতিমাশিল্পী