সুনামগঞ্জে ট্রাক-অটোরিকশা সংঘর্ষে মা-মেয়েসহ নিহত ৩
দৈনন্দিন
প্রকাশঃ ২২ সেপ্টেম্বর, ২০২৫ ৯:১৬ অপরাহ্ন
সিলেট নগরীর ব্যস্ত সড়কে দীর্ঘদিন ধরে বাড়তে থাকা যানজট ও অবৈধ বাহনের দৌরাত্ম্যে সৃষ্ট বিশৃঙ্খলা নিয়ন্ত্রণে অবশেষে মাঠে নেমেছে সিলেট মহানগর পুলিশ (এসএমপি)। সোমবার (২২ সেপ্টেম্বর) সকাল ৮টা থেকে নগরীর পাঁচটি গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্টে শুরু হয়েছে অবৈধ যানবাহনের বিরুদ্ধে বিশেষ অভিযান।
এসএমপি কমিশনারের প্রত্যক্ষ তত্ত্বাবধানে নগরীর মেন্দিবাগ, নাইওরপুল, জিতু মিয়ার পয়েন্ট, রিকাবীবাজার ও পাঠানটুলা এ অভিযান পরিচালনা করা হয়।
যদিও এসএমপির এই অভিযান নগরবাসীর প্রত্যাশার জায়গা থেকে স্বস্তিদায়ক উদ্যোগ, তবে প্রশ্ন থেকেই যাচ্ছে কতদিন এই অভিযান টিকবে? নগরবাসীর প্রশ্ন, অতীতেও নতুন দায়িত্ব নেয়ার পর প্রশাসন কিংবা পুলিশ কর্মকর্তাদের এমন কঠোর অভিযান পরিচালনা করতে দেখা গেছে, কিন্তু কিছুদিন পর অভিযান শিথিল হলে আবারও পুরোনো চিত্র ফিরে আসে সড়কে।
এসএমপির অতিরিক্ত উপ-পুলিশ কমিশনার (মিডিয়া) মোহাম্মদ সাইফুল ইসলাম বলেন, ‘এই অভিযান নিয়মিত চলমান থাকবে। সড়কে আইন ভঙ্গকারীদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
সোমবার সকাল থেকেই পুলিশ সদস্যরা নির্ধারিত পয়েন্টে অবস্থান নিয়ে যানবাহনের কাগজপত্র যাচাই শুরু করেন। দিনভর অভিযান শেষে ৮৭টি যানবাহন আটক করা হয়, যার মধ্যে ব্যাটারিচালিত রিকশা ৬৫টি, সিএনজিচালিত অটোরিক্সা ৫টি, লেগুনা ১টি, মোটরসাইকেল ১৪টি, ট্রাক ১টি ও পিকআপ ১টি। এছাড়া ১৭ টি যানবাহনের মালিকের বিরুদ্ধে মামলাও দিয়েছে পুলিশ।
সিলেট নগরীতে বর্তমানে হাজারো ব্যাটারিচালিত রিকশা ও অনুমোদনহীন সিএনজি অটোরিকশা চলাচল করছে। পাশাপাশি ভুয়া নাম্বারপ্লেট ব্যবহার করছেন অনেকেই। পাশাপাশি অনুমোদিত স্ট্যান্ড ছাড়াই যত্রতত্র পার্কিং করার ফলে প্রধান সড়কগুলোতে নিত্যদিনের সমস্যা হয়ে দাঁড়িয়েছে যানজট।
রিকাবীবাজারের ব্যবসায়ী আজিজুর রহমান বলেন, ‘প্রতিদিন বাসা থেকে দোকানে আসতে ১০ মিনিটের রাস্তা ৩০ মিনিট লেগে যায়। অবৈধ অটোরিকশার কারণে পুরো সড়ক জ্যামে আটকে থাকে। যদি অভিযান নিয়মিত হয়, তাহলে আমাদের অনেক কষ্ট লাঘব হবে।
তিনি প্রশ্ন রাখেন, ‘আসলে এই অভিযান টিকবে কতদিন? কারণ আমরা এর আগেও বহুবার এমন অভিযান করতে দেখেছি, বড়জোর ৬ থেকে ৭ দিন পরে আবার সেই আগের চিত্র ফিরে আসে।’
শাহজালাল উপশহরেরর বাসিন্দা শিক্ষার্থী সায়মা ইসলাম বলেন, ‘ক্লাসে যাওয়ার পথে প্রায়ই দেরি হয়। বিশেষ করে নাইওরপুল এলাকায় রিকশা-অটোরিকশার বিশৃঙ্খলার কারণে সময়মতো পৌঁছানো যায় না। পুলিশ যদি সত্যিই নিয়মিতভাবে এভাবে কড়াকড়ি করে, তাহলে আমরা উপকৃত হবো।’
তবে অনেক চালকের অভিযোগ, তাদের বিকল্প আয়ের সুযোগ না দিয়েই গাড়ি আটক করা হচ্ছে।
মেন্দিবাগ এলাকায় আটক হওয়া এক সিএনজি অটোরিক্সা চালক নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, ‘আমরা কষ্ট করে গাড়ি চালাই, লাইসেন্স পাইনি ঠিক, কিন্তু পরিবারের ভরণপোষণ তো করতে হবে। সরকার যদি অটোরিক্সার কাগজপত্র বৈধ করার সুযোগ দিত, তাহলে এ সমস্যা হতো না।’
এসএমপি কমিশনার আবদুল কুদ্দুছ চৌধুরী বলেন, ‘নগরবাসীর ভোগান্তি কমানো, যানজট নিরসন এবং দুর্ঘটনা রোধই এই অভিযানের মূল উদ্দেশ্য। অবৈধ যানবাহন সরাতে আমরা আগে সময় দিয়েছি, মাইকিং করেছি। কিন্তু নির্দেশনা না মানলে এখন কঠোর আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া ছাড়া উপায় নেই।’
সিলেট, সড়ক, অভিযান, অবৈধ যানবাহন, ব্যাটারিচালিত রিকশা,