ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে সারাদেশে ২৩৭টি আসনে প্রার্থী ঘোষণা করলেও বাকি রয়ে গেছে সুনামগঞ্জ-২ (দিরাই-শাল্লা) আসনসহ আরও ৬৩টি সংসদীয় আসন। ফলে প্রার্থীতা নিয়ে দ্বিধা-দ্বন্দ্বে ভুগছেন এই আসনের স্থানীয় বিএনপির নেতাকর্মী ও মনোনয়নপ্রত্যাশীরা।


অন্যদিকে জামায়াতে ইসলামী মনোনীত প্রার্থী ও সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগের আইনজীবী মোহাম্মদ শিশির মনিরকে নিয়েও রাজনীতির মাঠে বেশ তৎপর স্থানীয়রা। তারা মনে করছেন, শিশির মনির একজন হেভিওয়েট প্রার্থী হিসেবেই নির্বাচণের প্রস্তুতি নিচ্ছেন। 


এ অবস্থায় ধানের শীষের ‘হেভিয়েট’ প্রার্থী হিসেবে আসনটিতে কে পাচ্ছেন মনোনয়ন তা হয়ে ওঠেছে আলোচনার কেন্দ্রবিন্দু। এ নিয়ে স্থনীয় ভোটার ও নেতাকর্মীদের মাঝে জল্পনা-কল্পনার শেষ নেই। 


নির্বাচনের দিনক্ষণ যত এগিয়ে আসছে, ততই তীব্র হচ্ছে আলোচনা। স্থানীয় বিএনপি নেতাকর্মীরা মনে করছেন, কেন্দ্রীয় বিএনপির নির্বাহী কমিটির সদস্য ও সাবেক সংসদ সদস্য নাছির উদ্দীন চৌধুরীর শারীরিক সুস্থতার অপেক্ষায় রয়েছে কেন্দ্রীয় বিএনপি। ফলে তাঁকে ঘিরেই এই আসনের রাজনীতিতে চলছে সবচেয়ে বেশি আলোচনা।


এদিকে প্রায় সতেরো বছর পর নির্বাচনের সুষ্ঠু পরিবেশ পেয়ে সুনামগঞ্জ-২ (দিরাই-শাল্লা) আসনে বেশ ফুরফুরে জামায়াতে ইসলামী মনোনীত প্রার্থী আইনজীবী শিশির মনির। 


জানা গেছে, ইতিমধ্যে শিশির মনির দিরাই-শাল্লার বিভিন্ন এলাকায় নদীভাঙন রোধে জরুরি বরাদ্দ আদায়, বিভিন্ন হাটবাজারে সিসিটিভি স্থাপন, নিজ অর্থায়নে গ্রামীণ সড়ক নির্মাণসহ ফুটবল মাঠ সংস্কার এবং নৌকা বাইচ প্রতিযোগিতার আয়োজন করছেন। যা নির্বাচনী প্রচারণার ক্ষেত্রে সহায়ক হিসেবে কাজ করছে।  


স্থানীয় বিএনপির দায়িত্বশীল নেতারা বলছেন, নাছির উদ্দীন চৌধুরীকে প্রার্থী করা হলে তাঁর জয়ের সম্ভাবনা সবচেয়ে বেশি। তাঁরা মনে করেন, এতে দিরাই-শাল্লা আসনে প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ একটি নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। তাই এখনও প্রার্থীতা ঘোষণা না করায় ভোটের মাঠে নাছির উদ্দীন চৌধুরীর প্রতিই বিএনপি আস্থা রাখছে বলে মনে করছেন স্থানীয় ভোটাররা।


আসনটিতে নাছির উদ্দীন চৌধুরী ছাড়াও বিএনপি থেকে আরো তিনজন মনোনয়নপ্রত্যাশী নির্বাচনী প্রচারণা চালাচ্ছেন। তারা হলেন জেলা বিএনপির সাবেক উপদেষ্টা তাহির রায়হান চৌধুরী পাবেল,সাবেক বিচারপতি মিফতা উদ্দিন চৌধুরী রুমি ও যুক্তরাজ্য বিএনপির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আজমল হোসেন চৌধুরী জাবেদ। রাষ্ট্র কাঠামো মেরামতের ৩১ দফা বাস্তবায়ন,গ্রাম-গঞ্জে উটানবৈঠক ও শোডাউন দেওয়া সহ বিভিন্ন কর্মসূচি পালন করে আসছেন তারা।


আবার জোটগত কারনে এই আসনটি জমিয়তে উলামায়ে ইসলামকে ছেড়ে দেওয়ারও গুঞ্জন রয়েছে। গত ১০ অক্টোবর দিরাই উপজেলায় বড়োসরো করে মোটরসাইকেল শোডাউন করেছেন জমিয়তে উলামায়ে ইসলামের মনোনীত প্রার্থী, কেন্দ্রীয় জমিয়তের যুগ্ম মহাসচিব ড. মাওলানা শোয়াইব আহমেদ। তিনি তার আলোচনা সভায় বলে গেছেন এই আসনটি বাদ দিয়ে কোন জোট নয়। তবে তথ্য বলছে, জোটগত কারনে এই আসনটি অন্য কোন দলকে ছাড় দেওয়ার কোন রেকর্ডও নেই বিএনপির। 


নাছির উদ্দীন চৌধুরী সিলেট ভয়েসকে বলেন, ‘দিরাই-শাল্লার মানুষের মুখে হাসি ফুটাতে চাই। দিরাই-শাল্লার বাকি উন্নয়নটুকু আমি শেষ করে যেতে চাই।’


মোহাম্মদ শিশির মনির বলেন, আমি রাজনৈতিক হানাহানি চাই না। মিথ্যা আশ্বাস চাই না। অসম্মান চাই না। নির্যাতন চাই না।


তিনি বলেন, সকলের সম্মিলিত প্রচেষ্টায় এই দেশটাকে পরিবর্তন করে দিতে হবে। হাওর-বেষ্টিত এলাকা দিরাই-শাল্লার প্রকৃতিকে বাঁচিয়ে রাখতে গ্রামীণ রাস্তাঘাট উন্নয়ন, নদী ও খাল খননসহ বেকার যুবকদের কর্মসংস্থান সৃষ্টির লক্ষ্যে শিল্প-কারখানা তৈরি করার কথা জানান তিনি।


শেয়ার করুনঃ

নির্বাচন থেকে আরো পড়ুন

নাছির উদ্দীন, বিএনপি, শিশির মনির, জামায়াত, সুনামগঞ্জ-২,সংসদ নির্বাচন