
আসন্ন ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে দলীয় প্রার্থী ঘোষণার পর থেকেই সিলেটে বিএনপিতে অসন্তোষ চলছে। সিলেটের ছয়টি আসনের মধ্যে দুইটিতে প্রার্থী ঘোষণা না করায় এই দুই আসন নিয়েই মূলত বিএনপির ভেতরে ক্ষোভ দেখা দিয়েছে।
খালি রাখা দুইটি আসন জোটকে ছেড়ে দেওয়ার গুঞ্জন থাকলেও শেষ পর্যন্ত সিলেট-৪ (জৈন্তাপুর, গোয়াইনঘাট ও কোম্পানীগঞ্জ) আসনে দল থেকে মনোনয়ন দেওয়া হয়েছে জানিয়ে প্রচারণায় নেমেছেন বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা ও সিলেট সিটি করপোরেশনের সাবেক মেয়র আরিফুল হক চৌধুরী।
কিন্তু ঝুলন্ত অবস্থায় রয়েছে সিলেট-৫ (জকিগঞ্জ-কানাইঘাট) আসন। এই আসনে প্রার্থী ঘোষণা না করায় দীর্ঘদিন ধরে দলের মনোনয়নের প্রত্যাশায় কাজ করা সিলেট জেলা বিএনপির সহসভাপতি মামুনুর রশীদ নিজের সিদ্ধান্তে অনড়। কোনোভাবেই অন্য কোনো প্রার্থীকে মেনে নেবেন না বলে বিভিন্ন সমাবেশে বলে আসছেন। সিলেট ভয়েসকে জানিয়েছেন, নিজের সিদ্ধান্তে অনড় থাকার কথা।
অন্যদিকে, বিএনপির সঙ্গে আলোচনা শেষ না হওয়ায় জোটের সিদ্ধান্তেও যেতে পারেনি জমিয়তে উলামায়ে ইসলাম। বিএনপির সঙ্গে জোট হলে এই আসনে নির্বাচন করবেন দলটির কেন্দ্রীয় সভাপতি উবায়দুল্লাহ ফারুক। আর জোট না হলেও তিনি এই আসনে নির্বাচন করবেন বলে সিলেট ভয়েসকে জানিয়েছেন।
স্বাধীনতার পর থেকে সিলেট-৫ আসনে আওয়ামী লীগ ৪ বার, জাতীয় পার্টি ৩ বার, স্বতন্ত্র ২ বার ও ১ বার করে বিএনপি, জামায়াত ও ইসলামী ঐক্যজোটের প্রার্থী জয়লাভ করেন। বিএনপির কপাল পুড়ে জোট হলেই। বিএনপির পক্ষ থেকে আসনটি ভাগের হিস্যা হিসেবে দেওয়া হয় শরীকদের। বিএনপির সাথে জোট করে একবার বিজয়ী হন জামায়াতেরও প্রার্থী।
সূত্র বলছে, সিলেট-৫ আসনে এবার দুটি কারণে বিএনপি প্রার্থী ঘোষণা করেনি। প্রথমটি হলো-নির্বাচনে জোট হলে এই আসনটি শরিকদলকে ছেড়ে দেওয়া হতে পারে। দ্বিতীয়টি হলো-এই আসনে জামায়াত ও ইসলামী দলগুলোর ভোট ব্যাংকের একটা হিসাব রয়েছে। অন্যদিকে দীর্ঘদিন বিএনপির প্রার্থী নির্বাচন না করায় ভোট ব্যাংকে হিসাব মিলাতে পারছে না দলটি। যে কারণে প্রার্থী নির্বাচনে দলের নেতাদের অবস্থান অধিকতর যাচাই-বাছাই চলছে।
নির্বাচনকে কেন্দ্র করে মাঠে রয়েছেন বিএনপির ৯ প্রার্থী। তাদের মধ্যে আলোচনায় রয়েছেন সিলেট জেলা বিএনপির সহ-সভাপতি মামুনুর রশিদ (চাকসু মামুন), জেলা বিএনপির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক সিদ্দিকুর রহমান পাপলু, সিলেট জেলা বিএনপির উপদেষ্টা আশিক উদ্দিন চৌধুরী, সংযুক্ত আরব আমিরাত বিএনপির আহ্বায়ক জাকির হোসেন, মহানগর স্বেচ্ছাসেবক দলের আহ্বায়ক মাহবুবুল হক চৌধুরী, জেলা কৃষক দলের আহ্বায়ক ইকবাল আহমদ তাপাদার, যুক্তরাষ্ট্র বিএনপির সহসভাপতি শরীফ আহমদ লস্কর, আবুল হারিছ চৌধুরী কন্যা ব্যারিস্টার সামিরা তানজিন চৌধুরী ও কেন্দ্রীয় মহিলা দলের প্রচার সম্পাদক লুৎফা খানম চৌধুরী স্বপ্না।
বিএনপির মনোনয়ন প্রত্যাশী মামুনুর রশিদ (চাকসু মামুন) বলেন, দল আমাকে ৩ মাস আগে নিশ্চিত করেছে আমাকে মনোনয়ন দেয়া হবে। এখন যদি তারা জোট হয়ে যায় সেখানে আমার কিছুই করার নাই। তবে আমি স্বতন্ত্র হব কি না সেটি এখনও নিশ্চিত না।
তিনি বলেন, আমি স্বতন্ত্র প্রার্থী কেনোই বা হবো। যদি দল আমাকে তিনমাস আগেই জানিয়ে দিয়েছে আমি প্রার্থী। আমি এখনো আশাবাদি দল এবার সিলেট-৫ আসনে আমাকেই প্রার্থী ঘোষণা করবে।
জমিয়ত উলামায়ের ইসলামের কেন্দ্রিয় সভাপতি উবায়দুল্লাহ ফারুক সিলেট ভয়েসকে বলেন, আমি সিলেট-৫ আসনে জাতীয় সংসদ নির্বাচনে প্রার্থী হব এটা শতভাগ নিশ্চিত। হোক সেটা জোটবদ্ধ অথবা একক।
তিনি বলেন, বিএনপির কাছে আমরা কয়েকটি আসন চেয়েছি জোটের জন্য। যদি তারা জোটবদ্ধ হয় তাহলে হবে। আর যদি তারা জোটবদ্ধ না হয় তাহলে আমরা একক প্রার্থী ঘোষণা করবো দল থেকে।
শেয়ার করুনঃ
নির্বাচন থেকে আরো পড়ুন
সিলেট-৫ আসন, চাকসু মামুন, উবায়দুল্লাহ ফারুক


