আল হারামাইন হাসপাতালে রোগীর মৃত্যু: ৭ সদস্যের তদন্ত কমিটি
অনুসন্ধান
প্রকাশঃ ০৬ অক্টোবর ২০২৫
সুনামগঞ্জের জগন্নাথপুর উপজেলায় বনগাওঁ সরকারি ঘর পেয়েও থাকেন ১০ পরিবার। এর মধ্যে উমান থেকেও সরকারি ঘর পেয়েছেন। তারা ঘর পাওয়ার পর কিছুদিন থাকলেও প্রায় তিন বছর ধরে থাকেন না। ঘরের মধ্যে মালপত্র রেখে তালা দিয়ে ঘরটি দখল করে রেখেছেন। আবার কেউ অন্যলোক বসিয়ে রেখেছেন।
জগন্নাথপুর উপজেলার পাটলী ইউনিয়নের বনগাওঁ এলাকায় সরকারি ভূমিহীন ও গৃহহীন পরিবার পুনর্বাসনের ঘরগুলোতে সরেজমিন ঘুরে দেখা যায়, বেশ কয়েকটি ঘরে কেউ থাকে না। ২৩ সালে ৫৯ টি ঘর নির্মাণ করে দেওয়া হয়।
এ নিয়ে জগন্নাথপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বরকত উল্লাহ সঙ্গে কথা বললে তিনি জানান, দ্রুত তদন্ত করে যারা ঘরে থাকেন না, তাদের বরাদ্দ বাতিল করা হবে এবং প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
সংশ্লিষ্ট সূত্র ও সরেজমিন ঘুরে একাধিক ব্যক্তির সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, সরকারি ভূমিহীন ও গৃহহীন পরিবার পুনর্বাসনের জন্য জগন্নাথপুর উপজেলার বনগাওঁ প্রথম পর্যায়ে ৬০টি, ঘর নির্মাণ করা হয়েছে।
এসব ঘরে এখনও অনেক পরিবার ওঠেনি। ঘর নির্মাণকাজ শেষ হয়েছে। যাচাই-বাছাই করে ঘরগুলো বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে বলে জানান সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা।
জগন্নাথপুর উপজেলার বনগাওঁ এলাকায় গেলে দেখা যায়, এখানে প্রথম পর্যায় বনগাওঁ প্রায় তিন বছর আগে ৬০ ঘর বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে।
আরও একজন নতুন উঠেছেন। নাম রুমন রবিদাস তিনি বলেন, আমার ঘরের পেছনের দরজার লকে সমস্যা। জানালায় সমস্যা। বাথরুমের দরজার পেছনে ফাটা।
এরপর তার বাবা ২৭ নাম্বার ঘর জামাল আহমেদ ঘর পাওয়ার পর থেকে থাকেন না। অন্য লোক থাকার রেখেছেন।
স্থানীয় কয়েকজন নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, ১৪ নাম্বার ঘরের মালিক নুর মোহাম্মদ তিনি উমানে থাকেন ও ১৮ নাম্বার ঘরের মালিক উমানে থাকেন, বিদেশ থেকে ও সরকারি ঘর পেয়েছেন। তাদের ঘরে অন্য লোক কে বসিয়ে রাখেন।
৪ নম্বর ঘরটি নেছার আলী নামের একজনকে দেওয়া হয়েছে। তিনিও আজ প্রযন্ত থাকেন না। ঘরে তালা দিয়ে রেখে গেছেন।
১৭ নাম্বার ঘর শিবলী বেগম, ২ নাম্বার ঘর,জামলা উদ্দিন, ১৩ নাম্বার ঘর আনোয়ারা বেগম, ২৬ নাম্বার ঘর নুর আলী, ১৪ নাম্বার ঘর নুর মোহাম্মদ, ৫৯ নাম্বার ঘর মিন্টু কর, ৫৮ নাম্বার ঘর সুশেন কর, ৫৭ নাম্বার ঘর রবি কর, ৫৬ নাম্বার ঘর অখিল কর,৫৫ নাম্বার ঘর সাবিএী কর,৫৪ নাম্বার ঘর মঙ্গল কর, ৫২ নাম্বার ঘর দিনেশ কর, ৫১ নাম্বার ঘর নরেন্দ্র কর, ৪৪ নাম্বার ঘর রিংকু দেব, ২১ নাম্বার ঘর সুয়েল মিয়া৪৫ নাম্বার ঘর ,পটল দাশ। ১৯ টি ঘরে লোক বস বাস করেন না। সবাই রসুলগন্জ বাজার বাসা নিয়ে থাকেন।
স্থানীয়রা বলছেন, যেদিন ঘর দিয়েছে, সেদিন ঘর ঝাড়ু দিয়ে পরিষ্কার করেছেন। এরপর ঘরের জন্য কিছু মালামাল এনে সপ্তাহখানেক থেকে আর থাকেননি। তিনি কোথায় যেন হোটেলে কাজ করেন। সেখান থেকে যাতায়াত করতে অসুবিধা হয়, তাই থাকেন না। অনের বাড়ি ও বাসা রয়েছে।
স্থানীয় ফিরুজ আলী বলেন, শস্ব করের ৬/৭ পরিবার এখানে থাকবেন না। অনেক আগেই মালপত্র নিয়ে চলে গেছেন। রসুলগন্জ বাজার একটি বাসাভাড়া নিয়ে থাকেন।
আরেক নারী জানান, নুর মোহাম্মদ ও সেলিম আহমেদ উমান থাকেন, এখানে থাকে না তারা বলে আমরা আমাদের আত্মায় লোক বসাবো। আমার এখানে ভালো লাগে না। অফিসার আসলে আপনারা আমার ব্যাপারে না বলে দিয়েন।।
ঘরটি প্রথম পর্যায়ে নির্মাণ হলেও এখনও তালাবদ্ধ দেখা যায়। শুরু থেকেই এই ঘরে কেউ থাকে না বলে স্থানীয় সূত্রে জানা যায়।
এ ব্যাপারে জগন্নাথপুর উপজেলা প্রকল্প কর্মকর্তা শিমুল আমীন বলেন, ‘এই ঘরগুলো বরাদ্দ পাওয়ার পর যারা থাকেন না তাদের ব্যাপারে তদন্ত করে সত্যতা পেলে বরাদ্দ বাতিল করা হবে। বাতিলের পর নতুন করে যারা পাওয়ার যোগ্য তাদের দেওয়া হবে। তাছাড়া আমরাও মাঝে মধ্যে খোঁজখবর নেই। অনেক সময় সঠিকভাবে জানা যায় না, কারণ অনেকেই ঘরে তালা দিয়ে কাজে যান, ফেরেন অনেক রাতে। আবার অনেকেই খুব ভোরে কাজে যান। তাই সব মিলিয়ে সঠিক তথ্য পাওয়া যায় না।‘
তিনি আরও বলেন, ‘দ্বিতীয় পর্যায়ের বনগাওঁ গ্রামে যে ৬০ টি ঘর নির্মাণ করা হয়েছে সেই ঘরগুলোর। আসলে ঘরগুলো নির্মাণের সময় ও পরে স্থানীয় কিছু বখাটে হিংসা করে দরজা-জানালায় ইট দিয়ে জোরে ধাক্কা দিয়ে এমন অবস্থা করতে পারে। সেগুলো পরিদর্শন করে সব ঠিক করে দেওয়া হয়েছে।‘
জগন্নাথপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বরকত উল্লাহ বলেন, ‘বিদেশ থেকে যারা ঘর পেয়েছেন, তদন্ত করে ঘর বাতিল করা হবে। থাকেন না, তাদের ব্যাপারে খোঁজখবর নিয়ে বরাদ্দ বাতিল করা হবে। এ ব্যাপারে অলরেডি কাজ শুরু হয়েছে। যারা থাকেন না তাদের বাদ দিয়ে, যারা পাওয়ার যোগ্য তাদের নতুনভাবে দেওয়া হবে। এ ব্যাপারে আগামীতে আমাদের মিটিং আছে। সেখানে এ সিদ্ধান্ত নিয়ে নতুন করে বরাদ্দ দেওয়া হবে।‘
জগন্নাথপুর সহকারী কমিশনার ভুমি কর্মকর্তা মো. মহসীন উদ্দিন বলেন ‘আমি নতুন যোগদান করেছি। যারা থাকেন না তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্হা নেওয়া হবে।। আমি নতুন করে তালিকা করছি। তাদের কে বাতিল করে অন্য লোক দিয়ে দিবো।‘
জগন্নাথপুর, সরকারি ঘর, থাকেন না অনেকে