শাবিপ্রবিতে পুনঃভর্তি ও সেমিস্টার ফি পরিশোধের নির্দেশ, শিক্ষার্থীদের ক্ষোভ
তথ্যপ্রযুক্তি-শিক্ষা
প্রকাশঃ ২৯ মে, ২০২৫ ১০:১১ অপরাহ্ন
দীর্ঘ ২৯ বছর অধ্যাপনার পর অবসরোত্তর ছুটিতে (পিআরএল) যাচ্ছেন সিলেটের ঐতিহ্যবাহী মুরারিচাঁদ (এমসি) কলেজের অধ্যক্ষ প্রফেসর আবুল আনাম মো. রিয়াজ। শিক্ষক, শিক্ষার্থী ও শুভাকাঙ্ক্ষিদের বর্ণাঢ্য এক বিদায়ী সংবর্ধনার মধ্য দিয়ে অবসর নিয়েছেন তিনি।
বৃহস্পতিবার (২৯ মে) সকাল ১০টায় কলেজের অডিটোরিয়ামে এক বিদায়ী সংবর্ধনার আয়োজন করা হয়। অনুষ্ঠানে কলেজের শিক্ষক, কর্মচারী, শিক্ষার্থী এবং বিভিন্ন সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠনের সদস্যরা তাঁকে ফুলেল শুভেচ্ছা, ও ক্রেস্ট প্রদানের মাধ্যমে সংবর্ধনা জানান।
অধ্যক্ষ রিয়াজ চতুর্দশ (১৪ তম) বিসিএসের সাধারণ শিক্ষাক্যাডারের একজন কর্মকর্তা। ১৯৯৩ সালের ২৭ নভেম্বর খাগরাছড়ি সরকারি কলেজে প্রভাষক হিসেবে যোগদানের মধ্য দিয়ে তাঁর কর্মজীবন শুরু হয়।
১৯৯৫ সালের ৮ এপ্রিল এমসি কলেজে প্রভাষক হিসেবে যোগদান করে টানা ২৭ বছর এখানেই অধ্যাপনা করেন অধ্যক্ষ রিয়াজ। পরে ২০২২ সালের ৪ এপ্রিল অধ্যক্ষ হিসেবে পদোন্নতি পেয়ে সিলেট সরকারি কলেজের দায়িত্ব গ্রহণ করেন।
পরবর্তীতে ২০২৩ সালের ১৭ এপ্রিল পুনরায় অধ্যক্ষ পদে নিয়োগ পেয়ে তিনি এমসি কলেজে যোগদান করেন।
শিক্ষাজীবন থেকেই অধ্যক্ষ রিয়াজ মেধা, শৃঙ্খলা ও নেতৃত্বে পারদর্শী ছিলেন। তিনি সিলেটের দক্ষিণ সুরমা উপজেলার গুপশহর গ্রামের বাসিন্দা।
১৯৮৩ সালে সিলেট ক্যাডেট কলেজ থেকে উচ্চমাধ্যমিক (এইচ.এস.সি) শেষে ১৯৮৬ সালে এমসি কলেজ থেকে পদার্থবিজ্ঞানে স্নাতক (সম্মান) ডিগ্রি অর্জন করেন। এরপর চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ১৯৮৭ সালে একই বিষয়ের উপর স্নাতকোত্তর (এমএসসি) ডিগ্রি অর্জন করেন।
এমসি কলেজের উপাধ্যক্ষ প্রফেসর মো. আকমল হোসেনের সভাপতিত্বে ও এমসি কলেজ রিপোর্টার্স ইউনিটির সভাপতি মো. মুছলেহ উদ্দিন মুনাঈম ও কবিতা পরিষদের প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক অনুশুয়া অতসীর যৌথ সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখেন সদ্য অবসর গ্রহণ করা অধ্যক্ষ প্রফেসর আবুল আনাম মো. রিয়াজ।
তিনি বলেন, মুরারিচাঁদ কলেজের শিক্ষার্থী হয়েও এই কলেজের অধ্যক্ষ হওয়া আমার জন্য ছিল অত্যন্ত গর্বের। এমনকি এই কলেজেই আমার চাকরি জীবনের প্রায় ২৯ বছর অতিক্রম হয়েছে।'
অধ্যক্ষ রিয়াজ আরও বলেন, 'শিক্ষার্থীদের সঙ্গে মিশে আমি তাদের যুগোপযোগী একটি সুন্দর ক্যাম্পাস ও পাঠদানের ব্যবস্থা করতে চেষ্টা করেছি। জানিনা কতটুকু পেরেছি। আশা করি আপনারা ভালোভাবে লেখাপড়া করে দেশের একজন সৎ ও দক্ষ নাগরিক হয়ে দেশের সেবা করবে।'
অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন- কলেজের শিক্ষক পরিষদের সম্পাদক প্রফেসর মো. গিয়াস উদ্দিন, রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের বিভাগীয় প্রধান প্রফেসর মো. ফরিদ আহমেদ, বাংলা বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক শেখ মো. নজরুল ইসলাম প্রমুখ।
এর আগে, বুধবার রাতে তাঁর বিদায় সংক্রান্ত একটি ভিডিও বার্তা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে (ফেসবুক) ছড়িয়ে পড়তে দেখা যায়। মুহুর্তেই ভাইরাল হয় ভিডিওটি। ভিডিওতে শিক্ষক, শিক্ষার্থী ও কর্মকর্তা-কর্মচারী ও অভিভাবকদের ধন্যবাদ জানান অধ্যক্ষ রিয়াজ।
ভিডিও বার্তায় তিনি বলেন, 'আমি নিজেকে অত্যন্ত সৌভাগ্যমান মনে করি। কারণ, মুরারিচাঁদ কলেজের শিক্ষার্থী হয়ে এই কলেজেই আমার চাকরি জীবনের প্রায় ২৯ বছর অতিক্রম হয়েছে। আল্লাহর অশেষ কৃপায় মুরারিচাঁদ কলেজের অধ্যক্ষ পদে পদোন্নতি পেয়ে আগামী ১ জুন থেকে আমি অবসরে (পিআরএল) যাচ্ছি।'
কলেজের শিক্ষক, শিক্ষার্থী ও সংশ্লিষ্ট সকলকে ধন্যবাদ জানিয়ে তিনি বলেন, 'আমার কলিগ (সহযোগী শিক্ষকবৃন্দ), শিক্ষার্থী, কলেজের বিভিন্ন সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠন এবং সিলেটের আপামর জনতাকে সঙ্গে নিয়ে সমন্বয় করে আমরা কলেজটিকে এগিয়ে নিতে পেরিছি। এজন্য মহান আল্লাহর নিকট বিশেষভাবে আমি শুকরিয়া জ্ঞাপন করছি।'
ভিডিওতে অধ্যাপক রিয়াজ শতবর্ষী এমসি কলেজের ইতিহাস, দেশব্যাপী শিক্ষাক্ষেত্রে এর সাফল্য, এবং জাতীয় পর্যায়ে এর অবদান তুলে ধরেন।
অনুষ্ঠানে শিক্ষার্থীদের পক্ষে বক্তব্য রাখেন- ছাত্রদলের কলেজ শাখার আহবায়ক সেলিম আহমদ সাগর, ছাত্রশিবিরের সভাপতি ইসমাঈল খান সৌরভ, ছাত্র মজলিশের সভাপতি আব্দুল বাছিত, ছাত্রফ্রন্টের আহবায়ক সুমিত কান্তি দাস, এমসি কলেজ রিপোর্টার্স ইউনিটির সাধারণ সম্পাদক লবীব আহমদ, যুব রেড ক্রিসেন্টের দলনেতা ডালিম আহমেদ, বিজ্ঞান ক্লাবের সভাপতি আবু সাঈদ জাবের, মোহনা সাংস্কৃতিক সংগঠনের সভাপতি তাহিন আহমেদ, কবিতা পরিষদের সভাপতি মইনুল হাসান আবির, বিএনসিসির ক্যাডেট কর্পোরাল মোহাম্মদ মনোয়ার হোসাইন, রোভার স্কাউটসের সহসভাপতি রুবেল ফারহিন, থিয়েটার মুরারিচাঁদের সাধারণ সম্পাদক সায়মা জাহান, ইংরেজি বিভাগের ইরিনা হক, রোভার স্কাউটসের সাবেক সভাপতি সেলিম মাহমুদ, ডিগ্রি ক্লাবের সভাপতি রিহান খান প্রমুখ।
এমসি কলেজ, পিআরএল গমন, অবসরোত্তর ছুটি আবুল আনাম রিয়াজ