শাবিপ্রবিতে পুনঃভর্তি ও সেমিস্টার ফি পরিশোধের নির্দেশ, শিক্ষার্থীদের ক্ষোভ
তথ্যপ্রযুক্তি-শিক্ষা
প্রকাশঃ ১৮ নভেম্বর, ২০২৫ ৮:৪৪ অপরাহ্ন
সিলেটের শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় ছাত্রসংসদের (শাকসু) নির্বাচনকে সামনে রেখে জরুরি সংবাদ সম্মেলন করেন বাংলাদেশ ছাত্র ইউনিয়ন, শাবিপ্রবি সংসদের নেতৃত্ববৃনদ।
মঙ্গলবার (১৮ নভেম্বর) বিকাল ৩টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় লাইব্রেরীর সামনে সংবাদ সম্মেলনটি অনুষ্ঠিত হয়।
এসময় লিখিত বক্তব্যে ছাত্র ইউনিয়নের নেতৃবৃন্দরা বলেন, শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (শাবিপ্রবি) কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (শাকসু) নির্বাচন নিয়ে নির্বাচন কমিশন ও বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের ভূমিকা প্রশ্নবিদ্ধ হয়েছে। ছাত্র সংগঠনগুলোর অভিযোগ, নির্বাচন শুরুর আগ থেকেই কমিশন সমন্বয়হীনতার পরিচয় দিয়েছে এবং প্রশাসন পক্ষপাতদুষ্ট আচরণ করছে। গত ২৭ অক্টোবর শাকসু নির্বাচন কমিশন গঠিত হয়। কিন্তু পাঁচ দিনের মাথায়, ১ নভেম্বর কমিশনের চার সদস্য দায়িত্ব থেকে সরে দাঁড়ান। ছাত্র সংগঠনগুলো বলছে, রোডম্যাপ ও তফসিল ঘোষণার ক্ষেত্রে নির্বাচন কমিশন যথাসময়ে কার্যকর উদ্যোগ নিতে ব্যর্থ হয়েছে। অন্যদিকে কয়েকজন প্রভাবশালী ছাত্র প্রশাসনের সঙ্গে নিয়ে তফসিল ঘোষণার নামে ‘নাটক’ তৈরি করেছেন বলেও তাদের অভিযোগ।
এমন পরিস্থিতিতে সবচেয়ে বড় বিতর্ক সৃষ্টি হয় উপাচার্যের বক্তব্যকে কেন্দ্র করে। ছাত্রদের অভিযোগ, একটি সভায় উপাচার্য কয়েকজন ছাত্রকে ‘উইনিং পার্টি’ বলে আখ্যায়িত করেন এবং কারা ‘দুই–তিন হাজার ভোটে জিততে পারে’ সে বিষয়ে মন্তব্য করেন। সংগঠনগুলোর দাবি, উপাচার্যের এই মন্তব্য নির্বাচনের গ্রহণযোগ্যতাকে সরাসরি প্রভাবিত করে এবং অন্যান্য সম্ভাব্য প্রার্থীর যোগ্যতাকে প্রশ্নবিদ্ধ করে।
ছাত্র ইউনিয়ন জানায়, শাকসু নির্বাচনের গঠনতন্ত্র সংশোধনের জন্য প্রস্তাব দেওয়া হলেও এখনো প্রশাসন কোনো আনুষ্ঠানিক আলোচনায় বসেনি। এক মতবিনিময় সভায় ‘৭১ সালের জেনোসাইডার সংগঠন’ হিসেবে পরিচিত ছাত্র শিবিরের উপস্থিতি দেখে ছাত্র ইউনিয়ন ও ছাত্র মৈত্রী সভা থেকে ওয়াকআউট করে। এরপর থেকেই দুই সংগঠনের কর্মীদের কোণঠাসা করার চেষ্টা চলছে বলেও অভিযোগ করা হয়। তফসিল ঘোষণার আগেই শিবিরসমর্থিত সম্ভাব্য প্রার্থীরা কে কত ভোট পেতে পারে, সে বিষয়ে কুরুচিপূর্ণ মন্তব্যও করছেন বলে সংগঠনগুলোর দাবি।
এসব ঘটনার প্রেক্ষাপটে তারা বলছে, বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন ও নির্বাচন কমিশন একটি অবাধ, সুষ্ঠু ও অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন আয়োজন করতে আগ্রহী নয়। তাদের মতে, শাকসু নির্বাচন এখন ডাকসু, জাকসু, রাকসু ও চাকসুর মতোই ‘স্ক্রিপ্টেড রাজনীতির’ ধারাবাহিকতা হয়ে উঠছে। উপাচার্যের ‘উইনিং পার্টি’ মন্তব্য পরিস্থিতিকে আরও জটিল করেছে।
ছাত্র ইউনিয়ন তিন দফা দাবি জানিয়েছে, যার মধ্যে উপাচার্যকে তাঁর ‘উইনিং পার্টি’ মন্তব্যের জন্য প্রকাশ্যে ক্ষমা চাইতে হবে, শাকসুর গঠনতন্ত্র সংশোধনের বিষয়ে ক্যাম্পাসের সব অংশীজনের সঙ্গে অবিলম্বে আলোচনা করতে হবে, সবার জন্য সমান সুযোগ রেখে অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন নিশ্চিত করতে হবে।
তারা জানিয়েছে, আগামী ২৩ নভেম্বর, রবিবারের মধ্যে নির্বাচন কমিশন ও প্রশাসনকে তাদের উত্থাপিত বিষয়গুলো বিবেচনায় নিয়ে সিদ্ধান্ত জানাতে হবে।
এসময় উপস্থিত ছিলেন, সংগঠক নাজনীন লিজা, জুবায়ের আহম্মেদ জুয়েল, প্রান্তিক দীপম, সদস্য আনোয়ার ইনবে নূর, সদস্য তাইম প্রমুখ।
শাকসু. শাবিপ্রবি, সিলেট, সিলেটের শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়