শাবিপ্রবিতে পুনঃভর্তি ও সেমিস্টার ফি পরিশোধের নির্দেশ, শিক্ষার্থীদের ক্ষোভ
তথ্যপ্রযুক্তি-শিক্ষা
প্রকাশঃ ১৭ নভেম্বর, ২০২৫ ৫:৫৬ অপরাহ্ন
শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (শাকসু) এবং হল সংসদ নির্বাচনকে কেন্দ্র করে নির্বাচন কমিশন একটি বিশদ আচরণবিধিমালা-২০২৫ প্রকাশ করেছে নির্বাচন কমিশন।
আজ সোমবার (১৭ ডিসেম্বর) শাকসু নির্বাচনের অফিসিয়াল ওয়েবসাইটে এই আচরণবিধি প্রকাশ করা হয়। শান্তিপূর্ণ, স্বচ্ছ ও নিয়মতান্ত্রিক নির্বাচনের লক্ষ্যে তফসিল ঘোষণার দিন থেকে ফলাফল প্রকাশ পর্যন্ত এই কঠোর বিধিমালা কার্যকর থাকবে।
আচরণবিধিতে ১৮টি অনুচ্ছেদে মনোনয়নপত্র সংগ্রহ থেকে শুরু করে নির্বাচনে যানবাহনের ব্যবহার, প্রচার-প্রচারণা, সভা-সমাবেশ, আলোকসজ্জ্বা-বক্তব্য ও ভোটদান সংক্রান্ত বিভিন্ন বিষয় এবং তা লঙ্ঘণে শাস্তির বিষয় উল্লেখ করা হয়েছে।
আচরণবিধিতে মনোনয়নপত্র সংগ্রহ ও দাখিলের ক্ষেত্রে প্রার্থী এবং তাঁর প্রস্তাবক ও সমর্থনকারীসহ পাঁচজনের বেশি সদস্য নিয়ে কোনো প্রকার মিছিল বা শোভাযাত্রা সম্পূর্ণরূপে নিষিদ্ধ করা হয়েছে। এছাড়া, প্রার্থীর সশরীরে উপস্থিত থেকে মনোনয়নপত্র দাখিল ও প্রত্যাহারের নিয়ম রাখা হয়েছে।
স্বচ্ছতা ও মাদকমুক্ত ক্যাম্পাস নিশ্চিত করতে প্রার্থীদের জন্য ডোপ টেস্ট (Dope Test) বাধ্যতামূলক করা হয়েছে। প্রার্থীদের অবশ্যই বিশ্ববিদ্যালয়ের বায়োকেমিস্ট্রি এন্ড মলিকুলার বায়োলজি (বিএমবি) বিভাগে স্যাম্পল দেওয়ার পর প্রাপ্ত রসিদটি মনোনয়নপত্রের সাথে জমা দিতে হবে। যদি ডোপ টেস্টের ফলাফল পজিটিভ আসে, তবে তাৎক্ষণিকভাবে সেই প্রার্থীর প্রার্থিতা বাতিল বলে গণ্য হবে। রসিদ ছাড়া কোনো মনোনয়নপত্র গৃহীত হবে না।
আচরণবিধিতে নির্বাচনী প্রচার-প্রচারণার ক্ষেত্রে সকল প্রার্থীর জন্য সমান অধিকার নিশ্চিত করা হয়েছে। প্রচারণার সময়সীমা প্রতিদিন সকাল ৮টা থেকে রাত ১০টা পর্যন্ত নির্ধারণ করা হয়েছে এবং তা ভোটগ্রহণ শুরুর ৪৮ ঘণ্টা পূর্বে বন্ধ করতে হবে।
এছাড়াও প্রচারণার জন্য যানবাহন ব্যবহার কঠোরভাবে নিষিদ্ধ করা হয়েছে। মনোনয়নপত্র জমা, প্রত্যাহার বা প্রচারণায় মোটরসাইকেল, রিকশা, ঘোড়ার গাড়ি বা ব্যান্ড পার্টি সমেত কোনো প্রকার মিছিল বা শোডাউন করা যাবে না।
প্রার্থীরা ভোটকেন্দ্রে ভোটারদের আনা-নেওয়ার জন্য কোনো প্রকার যানবাহন ব্যবহার করতে পারবেন না; তবে শুধুমাত্র প্রধান নির্বাচন কমিশনার কর্তৃক অনুমোদিত স্টিকারযুক্ত যানবাহনই নির্বাচনী এলাকায় চলাচল করতে পারবে।
প্রচারণার ক্ষেত্রে শুধু সাদাকালো লিফলেট বা হ্যান্ডবিল (অনধিক ৬০ সে.মি. x ৪৫ সে.মি.) ব্যবহার করা যাবে। পোস্টার, বিলবোর্ড বা ফেস্টুন ব্যবহার সম্পূর্ণরূপে নিষিদ্ধ। কোনো স্থাপনা, দেয়াল, গাছপালা বা খুঁটিতে লিফলেট লাগানো বা কালি দিয়ে কোনো প্রকার দেয়াল লিখন করা যাবে না। একই সাথে, নির্বাচনী প্রচারের উদ্দেশ্যে প্রার্থীর ছবি সম্বলিত শার্ট, ক্যাপ বা অন্য কোনো পোশাক ব্যবহার করা যাবে না।
ক্যাম্পাস এলাকায় সকল প্রকার প্রচারকার্যে সাউন্ড সিস্টেম বা মাইক ব্যবহার নিষিদ্ধ। তবে অডিটোরিয়াম বা ক্যাম্পাসের ভেতরে অনুমোদিত স্থানে সভা-সমাবেশের ক্ষেত্রে কেবল সাউন্ড সিস্টেম ব্যবহার করা যেতে পারে, যা কোনোক্রমেই বিকাল ৫টার পর ব্যবহার করা যাবে না। একাডেমিক কার্যক্রমে যাতে কোনো বাধা সৃষ্টি না হয়, সেজন্য ক্লাসরুম বা পরীক্ষা হলের আশেপাশে কোনো সভা করা যাবে না।
অনলাইন বা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রচার চালানোর অনুমতি থাকলেও, তা অবশ্যই আইনসিদ্ধ ইতিবাচক পদ্ধতিতে হতে হবে আচরণবিধিতে উল্লেখ করা হয়েছে। ব্যক্তিগত আক্রমণ, চরিত্র হনন, গুজব ছড়ানো, মানহানিকর উক্তি বা সাম্প্রদায়িক অনুভূতিতে আঘাত হানে এমন কোনো বক্তব্য বা কন্টেন্ট প্রচার করা যাবে না। এমন অভিযোগ প্রমাণিত হলে নির্বাচন কমিশন সাইট বন্ধ বা দায়ী ব্যক্তির বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে পারবে।
ভোটের দিন ভোটারদের কোনো প্রকার পানীয়, খাদ্য বা উপঢৌকন দিয়ে প্রভাবিত করা যাবে না। ভোটকেন্দ্রের ১০০ মিটারের মধ্যে ভোটার স্লিপ বিতরণ নিষিদ্ধ করা হয়েছে।
নির্বাচনী প্রচার ও ভোট চলাকালীন বিস্ফোরক, দেশীয় অস্ত্র বা আগ্নেয়াস্ত্র বহন সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ। নিরাপত্তার স্বার্থে নির্বাচনের দিন বহিরাগতদের ক্যাম্পাসে প্রবেশাধিকার সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ।
নির্বাচনী আচরণবিধি লংঘনকারী কোনো প্রার্থী বা ভোটারকে সর্বোচ্চ ২০ হাজার টাকা জরিমানা, প্রার্থীর প্রার্থিতা বাতিল, বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বহিষ্কার বা রাষ্ট্রীয়/বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন অনুযায়ী অন্য কোনো দণ্ডে দণ্ডিত করা যেতে পারে। নির্বাচন সংক্রান্ত যেকোনো বিষয়ে নির্বাচন কমিশনের সিদ্ধান্তই চূড়ান্ত বলে বিবেচিত হবে।
শাকসু, শাবিপ্রবি, আচরণবিধি,