ব্রাজিলের আমাজন রেইনফরেস্টের সন্নিকটে বেলেম শহরে চলমান আন্তর্জাতিক জলবায়ু সম্মেলন (কপ৩০) উপলক্ষে জলবায়ু ন্যায্যতার দাবিতে সিলেটে সমাবেশ হয়েছে। বিশ্বব্যাপী কর্মদিবসের অংশ হিসেবে শনিবার দুপুরে শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (শাবিপ্রবি) শহীদ মিনার প্রাঙ্গণে এই সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়।

‘ধরিত্রী রক্ষায় আমরা (ধরা)’ সিলেট শাখা, শাবিপ্রবির পরিবেশবিষয়ক সংগঠন গ্রিন এক্সপ্লোর সোসাইটি এবং সুরমা রিভার ওয়াটারকিপার-এর যৌথ উদ্যোগে আয়োজিত সমাবেশে বক্তারা বলেন, “বিশ্ব এক গভীর সংকটের যুগে প্রবেশ করেছে যেখানে বৈষম্য, জলবায়ু বিপর্যয় ও প্রকৃতির ধ্বংসের প্রভাব সরাসরি মানুষের জীবনে আঘাত হানছে। কর্পোরেট আধিপত্য এবং দায়মুক্তি চলতে থাকলে প্রান্তিক ও ক্ষতিগ্রস্ত দেশগুলো মৃত্যু উপত্যকায় পরিণত হবে।”

সমাবেশে সভাপতিত্ব করেন সুরমা রিভার ওয়াটার কিপার ও ধরা সিলেট শাখার সদস্য সচিব আব্দুল করিম চৌধুরী কিম। সঞ্চালনায় ছিলেন ধরার সদস্য রেজাউল কিবরিয়া লিমন। প্রধান অতিথি ছিলেন ধরার সংগঠক ও মেট্রোপলিটন ইউনিভার্সিটির ভাইস চ্যান্সেলর প্রফেসর ড. মোহাম্মদ জহিরুল হক। বিশেষ অতিথি ছিলেন শাবিপ্রবির সমাজকর্ম বিভাগের প্রফেসর ড. মোহাম্মদ আলী ওয়াক্কাস।

অনুষ্ঠানে বক্তব্য দেন গ্রিন এক্সপ্লোর সোসাইটির জি-স্টুডিও উইং চিফ মোহাম্মদ হানিফ হাসান নিশান, গণমাধ্যমকর্মী রোমেনা বেগম রোজী, পরিবেশকর্মী সোহাগ তাজুল আমীন, নাট্যকর্মী নাহিদ পারভেজ বাবু, ব্যাংকার গউছ মঈনুদ্দীন হায়দার, গ্রিন এক্সপ্লোর সোসাইটির সভাপতি জাহ্নবী দত্ত, সাধারণ সম্পাদক হাসিবুর রহমান মোল্লা, খোয়াই বন্ধনের সভাপতি মোরশেদ আলম, ঊষার সভাপতি শাকিল হাসান, নাজমুল হাসানসহ অন্যরা।

প্রধান অতিথি ড. জহিরুল হক বলেন, “বাংলাদেশ বিশ্বের জলবায়ু পরিবর্তনে সবচেয়ে ঝুঁকিপূর্ণ দেশগুলোর অন্যতম। কিন্তু অবস্থানগত কারণে আমরা জলবায়ু ন্যায্যতা থেকেও বঞ্চিত। উন্নত দেশগুলো জলবায়ু অর্থায়নের নামে আমাদের ঋণের ফাঁদে ফেলছে। বৈশ্বিক অন্যায্য অর্থনৈতিক ব্যবস্থাই পরিবেশকে শোষণের দিকে ঠেলে দিচ্ছে।” তিনি এই পরিবেশগত বৈষম্যকে ‘বর্ণবাদী কাঠামো’ হিসেবে উল্লেখ করেন।

বিশেষ অতিথি অধ্যাপক আলী ওয়াক্কাস বলেন, বাংলাদেশসহ অনুরূপ দেশগুলো পরিবেশ সংকটের জন্য দায়ী না হয়েও এর পরিণতির বোঝা বইছে। জলবায়ু ঋণ নয়; যথার্থ অর্থায়নই এসব ক্ষতিগ্রস্ত দেশকে পুনর্বাসনের পথ দেখাতে পারে।

সভাপতি আব্দুল করিম চৌধুরী কিম বলেন, কপ৩০ চলাকালীন আমরা বাংলাদেশের ১২টি জলবায়ু–ঝুঁকিপূর্ণ স্থানে একইসঙ্গে কর্মসূচি পালন করেছি। ভূমি, জল, ম্যানগ্রোভ, মহাসাগর, বন, জীবন ও মানবিক মর্যাদা রক্ষার জন্য এই সংগ্রাম প্রতিদিনের।


শেয়ার করুনঃ

প্রাণ-প্রকৃতি-পরিবেশ থেকে আরো পড়ুন