৩ আগস্ট, ২০২৪। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ দিন কারণ এদিন কোটাবিরোধী আন্দোলন থেকে ৯ দফা দাবির আন্দোলন হয়ে ছাত্র-জনতার এ আন্দোলন পরিণত হয় স্বৈরাচারী আওয়ামী লীগ সরকার পতনের একদফা দাবির আন্দোলনে।

আগেরদিনের ঘোষিত কর্মসূচি অনুযায়ী এদিন সারাদেশে বিক্ষোভ কর্মসূচির ঘোষণা ছিল। দুপুর গড়াতেই সিলেট নগরীর চৌহাট্টা পয়েন্টে বাড়তে থাকে ছাত্র-জনতার ভিড়। বৃষ্টি উপেক্ষা করে অজস্র মানুষ জড়ো হয়ে স্লোগান দিতে থাকেন। 

প্রায় ঘন্টাদুয়েক বিক্ষোভ সমাবেশ চলার পর বেলা পাঁচটার দিকে আন্দোলনকারীদের ছত্রভঙ্গ করতে সাউন্ড গ্রেনেড, টিয়ার গ্যাস ও শটগানের গুলি ছোড়ে পুলিশ। এরপর আন্দোলন ছড়িয়ে পড়ে নগরজুড়ে। জিন্দাবাজার, নয়াসড়ক, দরগা গেইটসহ বিভিন্ন এলাকায় ছড়িয়ে পড়ে বিক্ষোভ চালিয়ে যান ছাত্র-জনতা। 

পুলিশের গুলি-সাউন্ড গ্রেনেডে আহত হন শতাধিক শিক্ষার্থী, সাধারণ মানুষ, গণমাধ্যমকর্মী। এদিকে নগরীর বিভিন্ন স্থানে আন্দোলনকারীদের উপর ঝটিকা হামলা চালায় ছাত্রলীগ, যুবলীগ ও স্বেচ্ছাসেবক লীগের নেতাকর্মীরা।

সেদিন চৌহাট্টা পয়েন্টে ছাত্র-জনতার শান্তিপূর্ণ বিক্ষোভ মিছিলে পুলিশী হামলার ঘটনায় নিন্দা জানিয়ে বিবৃতি দেয় সিলেট জেলা বিএনপি, বাম গণতান্ত্রিক জোট, বাংলাদেশ জাসদ ও ফ্যাসিবাদবিরোধী বাম মোর্চা সিলেট জেলা শাখার নেতৃবৃন্দ।

এদিকে রাজধানীতে তখন আরো উত্তাল অবস্থায়। লাখো মানুষ সমবেশ নগরজুড়ে। চলে বিক্ষোভ, সংঘর্ষ, গুলি– প্রাণ যায় অনেকের। তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তখন আন্দোলনের সমন্বয়কদের সাথে বৈঠকের আহবান জানান, ৯ দফা দাবি পূরণেও উদ্যোগ নেয়া হয়, গ্রেপ্তার করা হয় আবু সাঈদ হত্যায় জড়িত দুই পুলিশ সদস্যকে।

কিন্তু সার্বিকভাবে তখন আর আলোচনার পরিস্থিতি ছিল না। বিকেল ৫টায় বিপুল জনসমাগমের সামনে দাড়িয়ে আওয়ামী লীগ সরকারের পদত্যাগের একদফা ঘোষণা করেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়ক নাহিদ ইসলাম।

সেই সাথে 'সকলের নিকট গ্রহণযোগ্য ব্যক্তির নেতৃত্বে একটি গ্রহণযোগ্য ও অন্তর্ভুক্তিমূলক জাতীয় সরকার গঠনের' দাবি জানানো হয়।


শেয়ার করুনঃ

সংগ্রাম-স্বাধীনতা থেকে আরো পড়ুন

জুলাই অভ্যুত্থান, সিলেট, আওয়ামী লীগ, সরকার, পদত্যাগ, একদফা, বৈষম্যবিরোধী আন্দোলন,