সিলেট-ঢাকা মহাসড়ক দ্রুত সংস্কারসহ সিলেটের সঙ্গে বৈষম্য নিরসনে সাত দফা দাবিতে তিনদিন ধরে অনশনে থাকা যুবক আব্দুল্লাহ মামুন সুজনের সঙ্গে একাত্মতা প্রকাশ করে সিলেটে সড়ক অবরোধ করে রেখেছে দুইটি সংগঠন। 

 

শনিবার (১১ অক্টোবর) বিকেলে সুজনের সঙ্গে একাত্মতা পোষণ করে বিক্ষোভ মিছিল করে বাংলাদেশ গণতান্ত্রিক ছাত্র সংসদ সিলেট জেলা ও মহানগর শাখা এবং রেভিটা বাংলাদেশ সিলেট জেলা ও মহানগর শাখা। বিক্ষোভ মিছিল শেষে বাশ ফেলে চৌহাট্টা-জিন্দাবাজার সড়ক অবরোধ করে রেখেছে তারা। 

 

প্রায় তিন ঘন্টা থেকে থেকে যান চলাচল বন্ধ রয়েছে ওই সড়কটিতে। শনিবার রাত সোয়া আটটায় এ রিপোর্ট লেখা পর্য়ন্ত চৌহাট্টা-জিন্দাবাজার সড়ক দিয়ে যান চলাচল বন্ধ রয়েছে। এতে করে ভোগান্তিতে পড়েছেন পথচারীরা। 

 

পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে চৌহাট্টা এলাকায় বিপুল পরিমাণ পুলিশ সদস্য মোতায়েন করা হয়েছে। তবে এখন পর্যন্ত কোনো অপ্রীতিকর ঘটনার খবর পাওয়া যায়নি। 

 

এদিকে, অনশনরত সুজনের সঙ্গে একাত্মতা পোষণ করে দুইটি সংগঠন সড়ক অবরোধ করলেও তাদের সঙ্গে বিভিন্ন শ্রেণি পেশার মানুষ  সামাজিক সংগঠনও এসে যোগ দিয়েছেন। জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) কয়েকজন নেতাকেও ঘটনাস্থলে দেখা গেছে। অবরোধকারীদের রাস্তায় শুয়ে বিভিন্ন স্লোগান দিতেও শোনা গেছে। 

 

‘সিলেটের সঙ্গে বৈষম্য কেন?’এমন প্রশ্নকে সামনে রেখে বৃহস্পতিবার (৯ অক্টোবর) দুপুর ১টা থেকে সিলেটের কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে অনশন কর্মসূচি শুরু করেন আব্দুল্লাহ মামুন সুজন। সুজন সিলেটের জকিগঞ্জ উপজেলার সুলতানপুর ইউনিয়নের বাসিন্দা। তিনি একজন বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের ব্যবসায়ী।

 

অনশন শুরুর পর থেকে তিনি এক ফোঁটা পানিও গ্রহণ করেননি তিনি। তাঁর নীরব প্রতিবাদ যেন সিলেটের দীর্ঘদিনের উন্নয়নবঞ্চনার বিরুদ্ধে এক গর্জে ওঠা আহ্বান।

 

প্রথমে একক এই অনশন এখন রূপ নিয়েছে জনসমর্থিত আন্দোলনে। শিক্ষার্থী, সচেতন নাগরিক, ও বিভিন্ন ছাত্র ও সামাজিক সংগঠনের নেতাকর্মীরা তাঁর সঙ্গে সংহতি প্রকাশ করেছেন। তাদের মধ্যে রয়েছে রেভিটা বাংলাদেশ সিলেট জেলা ও মহানগর এবং বাংলাদেশ গণতান্ত্রিক ছাত্র সংসদ সিলেট জেলা ও মহানগর।

 

শনিবার (১১ অক্টোবর) বিকেল ৪টায় রেভিটা বাংলাদেশ কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে এক প্রতিবাদ সমাবেশ ও মিছিলের আয়োজন করে। সংগঠনের নেতারা বলেন, ‘সিলেটবাসীর ন্যায্য অধিকার প্রতিষ্ঠা না হওয়া পর্যন্ত আমরা রাজপথে থাকব। প্রশাসনের নির্বিকার ভূমিকা আর মেনে নেওয়া যায় না।’

 

একই দিন একই সময়ে চৌহাট্টা কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে অবস্থান কর্মসূচি পালন করে বাংলাদেশ গণতান্ত্রিক ছাত্র সংসদ। আন্দোলনের তৃতীয় দিন পার হলেও প্রশাসনের পক্ষ থেকে কোনো আশ্বাস বা কার্যকর পদক্ষেপ না আসায় ক্ষোভ বাড়ছে সাধারণ মানুষের মধ্যে। শহীদ মিনার এলাকায় শিক্ষার্থীদের অবস্থান, সামাজিক মাধ্যমে আলোড়ন, আর সংগঠনগুলোর মিছিল ও মানববন্ধন সিলেটের বঞ্চনার চিত্র আরও স্পষ্ট করেছে।

 

সুজনের পাশে রাখা প্ল্যাকার্ডগুলোয় লেখা সিলেটবাসীর সাত দফা দাবিগুলোর মধ্যে ছিল, সিলেটের জন্য বিশেষ বাজেট ঘোষণা করতে হবে, সিলেট–ঢাকা মহাসড়কের ছয় লেনের কাজ দ্রুত শেষ করতে হবে, সিলেট বিমানবন্দরকে আন্তর্জাতিক মানে উন্নীত করে ফ্লাইট সংখ্যা বাড়াতে হবে, সিলেট থেকে দেশীয় ও আন্তর্জাতিক ফ্লাইটে বিমানের টিকিটের দাম কমাতে হবে, সিলেট–ঢাকা রেলপথে ডাবল লাইন নির্মাণ ও নতুন ট্রেন বাড়াতে হবে, সিলেটে পূর্ণাঙ্গ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপন করতে হবে, সিলেটের পর্যটন খাতের উন্নয়নে বিশেষ বাজেট দিতে হবে।

 


শেয়ার করুনঃ

দৈনন্দিন থেকে আরো পড়ুন

অনশন, সড়ক অবরোধ